খবরাখবর

স্কুলের বেতন কমানোর দাবিতে এবার বাঁশদ্রোনীর ডি পল স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়ে রাস্তা অবরোধ করল অভিভাবকেরা

অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ১৮ই জুন ২০২০ : বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া ও মন্ত্রী লক্ষীরতন শুক্ল-র আবেদন করেছিলেন সব স্কুল যেন এই করোনা লকডাউনের সময় তিন মাসের মাইনে ও স্কুল বাসের ভাড়ার সাথে নতুন সেশনের ফি ৫০ % ছাড় দেয়। তাদের এই আবেদনে সাড়া দিয়ে বালি বিধানসভার বহু স্কুল ছাড় দিয়েছে। একই ঘটনা হয়েছে হাওড়াতেও।একই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন কলকাতার বেশ কিছু অ্যাংলো মিডিয়াম ও মিশিনারি স্কুল।এরপর থেকেই কলকাতার বিভিন্ন স্কুলে সেই দাবি নিয়ে সরব হয়েছেন অভিভাবকেরা। কিছু স্কুলে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বেরা সমাধান সূত্র করে দিয়েছেন যেমন কলকাতা কর্পোরেশনের বোরো চেয়ারম্যান বর্তমানে ৯৫ নং ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর তপন দাশগুপ্ত। অভিভাবকদের বক্তব্য লকডাউন অবস্থা থাকার কারণে কেউ তাদের স্বাভাবিক জীবনে রোজগার করতে পারে নি। এছাড়া অনেকের চাকরি চলে গেছে। এসব তো একটা মানবিক দিক কিন্তু আসলে তো এই সময় স্কুলগুলো সব বন্ধ ছিল। করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি হয় কোন স্কুল আগস্টের আগে খুলবে না। সুতরাং স্কুলের বিদ্যুৎ লাগে নি, বাস চলে নি, ল্যাব খলে নি, মেডিক্যাল ছিল না, লাইব্রেরী খোলা হয় নি, শিক্ষক-শিক্ষিকা কেউ আসেন নি, কোন উন্নয়ন প্রকল্পে স্কুলের খরচ হয় নি, মেন্টেনেন্স খরচ হয়নি। তবে কেন এত টাকা প্রতি মাসে নেবে স্কুল। এই অবস্থায় স্কুলের পরিস্থিতির উপর নজর রেখে মানবিক হওয়া উচিত।

কিন্তু কলকাতার বাঁশদ্রোণীতে ডি পল স্কুল তা করতে নারাজ। তাঁরা তাদের নতুন বর্ষে একই বার্ষিক ফি থেকে স্কুলের অন্যান্য চার্জ বজায় রেখেছে। স্কুল কতৃপক্ষের সাথে কথা বলতে গেলে তাদের কোন আমোল দেওয়া হয় নি বলে অভিযোগ। এরপর অভিভাবকেরা বিক্ষোভ দেখিয়ে বাঁশদ্রোণী রাস্তা অবরোধ করে। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন দাবি নিয়ে পোস্টার। তাঁরা স্কুল কতৃপক্ষেকে দাবি জানায় ভর্তির সময় যে এককালীন টাকা নেওয়া হয় এবং মাসিক টিউশন ফি ৫০ % করতে হবে। স্কুল কতৃপক্ষ কাউকে এই সময় টাকা দেওয়ার ব্যাপারে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে বাধ্য করতে পারবে না।এই সময় স্কুল বন্ধ থাকায় শীততাপ মেশিন চালানো হয় নি তাই তার চার্জ বাদ দিতে হবে।গত বছর অষ্টম ক্লাসের ছাত্রছাত্রীর স্বাভাবিক সময় মাসে কম্পিউটার চার্জ সহ ২১২৫ টাকা দিয়েছে কিন্তু এবছর নবম ক্লাসে কেন ৩২৯০ টাকা করা হল যেখানে সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী বারবার করে অনুরোধ করছেন স্কুলের ফি যেন বাড়ানো না হয়। এই বেতন বৃদ্ধির হার প্রায় ৬০%।

স্কুলের পক্ষ থেকে ফাদার অভিভাবকদের মাত্র ছয় জনকে দেখা করার আশ্বাস দিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে দেখা না করে চলে যান। এতেই অভিভাবকেরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরপরই সকলে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।এখন প্রশ্ন হল একটা মিশিনারি স্কুল যদি এতটাই অমানবিক ও অবিবেচক হয় তবে তাঁরা ছাত্রছাত্রীদের কি নৈতিকতার বানী শেখাবেন? তাঁরা প্রভু যীশু খ্রিস্টের কি বানী মানতে বলবেন ছাত্রছাত্রীদের। তাঁরা যে সমাজসেবার নামে ব্যবসা করছেন তা এখান থেকে জলের মত পরিষ্কার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *