করোনা থেকে আমফান দুর্জোগে নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে মানুষের পাশে থেকেছেন রাজপুর সোনারপুর ৩ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা অশোকা মির্ধা
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ৩রা জুন ২০২০ : মার্চ মাস থেকে বাংলায় শুরু হয়েছে করোনার তান্ডব, তারপর ২২শে মার্চ প্রথম করোনা মোকাবিলার জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সারা ভারতকে এই মহামারীকে মোকাবিলা করার জন্য প্রথম লকডাউন ঘোষণা করে পথ দেখিয়েছে। তারপর কেন্দ্র সরকার ও অন্যান্য রাজ্য সেই রাস্তাতেই হেঁটেছে। কিন্তু সেদিন বোঝা যায় নি এই লকডাউন কতদিনের জন্য চলবে আর লকডাউনের ফলে মানুষের কি পরিণতি হবে। যত দিন এগিয়েছে তত মানুষের কাছে সবটাই পরিষ্কার হয়েছে। কিন্তু চিত্রটা পরিষ্কার হলেও মানুষের কিছু উপায় ছিল না। গরীব বা দুঃস্থ দিন আনা মানুষগুলোর সেদিন থেকে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিল, তবে তাদের উপায় কি, সকলের তো রোজগার বন্ধ। এইরকম অবস্থায় গোটা রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিশেষ করে শাসক দলের নেতা কর্মীরা, বিভিন্ন সমাজসেবা সংগঠনগুলো এই অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে গেছে। প্রথমদিন মাত্র ১ জন করোনা আক্রান্তকে নিয়ে গোটা রাজ্যে গেল গেল রব উঠেছিল আর আজ সেখানে এই রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫০৪।
এই অবস্থায় প্রথম দিন থেকে রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের পৌরমাতা অশোকা মির্ধা নিরলস ভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন এই অসহায় মানুষগুলোকে সাহায্য করার জন্য।যদিও আজ পৌরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, প্রশাসক ও তাঁর পারিষদ পৌরসভার কাজ দেখছেন। পৌরমাতা হিসাবে তাঁর আজ সেভাবে কোন দায়িত্ব না থাকলেও মানুষের প্রতি তাঁর একটা দায়বদ্ধতা থেকেই যায়। সোনারপুর উত্তর বিধানসভার বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম ও সি আই সি নজরুল আলি মন্ডলের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখে মানুষের পাশে থেকেছেন।কখনও খাদ্য সামগ্রী তুলে দিয়েছেন আবার কখনও আর্থিক সাহায্যও করেছেন। কখনও নরেন্দ্রপুর থানার মাধ্যমে মানুষের কাছে খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন। এরমধ্যে রাজপুর সোনারপুরের এই ৩ নং ওয়ার্ডে প্রথম করোনা আক্রান্ত চিহ্নিত হতে গোটা গড়িয়া স্টেশন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। সেদিনও অশোকা সেই এলাকায় গিয়ে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে জীবাণুমুক্ত করার কাজে সাহায্য করেছিলেন। এরপর আতঙ্ক আরও বাড়ল যখন সেই করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হল। তখন ওই এলাকা কন্টাইনমেন্ট জোন করে দেওয়া হল। তখনও পৌরমাতা নিজে উদ্যোগী হয়ে সেই এলাকার মানুষদের খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব শুধু নয়, এলাকায় র্যাপিড টেস্ট করার ব্যবস্থাতেও সহযোগিতা করেছিলেন।এছাড়া তিনি নিয়ম করে ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় অসহায় মানুষকে একবেলা রান্না করা খাবার সরবরাহ করেছেন।গোটা ওয়ার্ড জুড়ে করোনার সরকারি স্বাস্থ্য বিধি সচেতনতার অটো প্রচারও করেছেন যাতে মানুষ বেশি আতঙ্কিত না হয়, স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে।
এরপর করোনা মোকাবিলার কাজ শেষ না হতেই থাবা মারলো আমফান ঘুর্নি ঝড়। ওয়ার্ডের বহু টিনের চাল উড়ে গেল যার কোন হদিশ পাওয়া যায় নি। মানুষ আরও অসহায় হয়ে পড়ল।এবার ঝড়ের দুর্গতদের জন্য রাস্তায় পড়ে থাকার কারণে একদিকে রাস্তা বন্ধ, অন্যদিকে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে যাওয়ার কারণে কোন বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই আবার সাথে জল নেই, এক কথায় দম বন্ধ হয়ে আসা অবস্থায় অশোকা রাস্তায় নেমে নিজে উদ্যোগী হয়ে গাছ কাটিয়ে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন।দুর্গত মানুষদের মাথার ছাউনির জন্য পৌরসভার দেওয়া ত্রিপল তুলে দিয়েছেন। আজও মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন যাতে মানুষ অনাহারে বা অভুক্ত না থাকে।এব্যাপারে অশোকা জানান, আমায় প্রতিটা সময় বিধায়ক ফিরদৌসীদি উপদেশ দিয়েছেন কিভাবে কাজ করতে হবে আর এছাড়া আমাদের সকলের অভিভাবক নজরুল দা সব সময় গাইডলাইন দিয়েছেন যা মেনে আমি শুধু কাজটা করে গিয়েছি।এমন দুজন মানুষকে পাশে পেয়েছিলাম বলে কোন সমস্যাই আমায় কাহিল করতে পারে নি।
দুজনেই সব সময় আমায় সহযোগিতা করেছেন বলেই সব সমস্যার আমি সমাধান করতে পেরেছি। আজ এলাকায় ৫দিন বিদ্যুৎ ছিল না, মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছিল সব থেকে বেশি কারণ বাড়িতে জল ছিল না, আলো ছিল না। নজরুলদার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আবার বিদ্যুৎ সংযোগ সম্ভব হয়েছে, মানুষকে পৌরসভার জলের ট্যাঙ্ক এনে প্রয়োজন অনুযায়ী না হলেও সাধ্য মত জল সরবরাহ করা গেছে।মানুষ বিপদের দিনে পাশে দাঁড়িয়ে পরিষেবা দেওয়াটাকে মনে রাখে, রাজনীতি নয়।
please follow us on twitter : https://twitter.com/abptakmaa