“দিদিকে বলো” কর্মসূচী নিয়ে গড়িয়ায় দুটো ওয়ার্ডে নামলো সোনারপুর যুব তৃণমূল কংগ্রেস
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ৮ই সেপ্টেম্বর ২০১৯ : “দিদিকে বলো” কর্মসূচী নিয়ে সাম্প্রতিক নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে এক সভায় রাজ্যের তৃণমূল যুব কংগ্রেসকে কিছুটা দায়িত্ব দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল দলের সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি। আর ঠিক তার পরেই সোনারপুর উত্তর বিধানসভার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পাপাই দত্ত গড়িয়া স্টেশন এলাকায় দুটো ওয়ার্ডের দায়িত্ব তুলে নেন। সাম্প্রতিক হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে ২ নং ওয়ার্ডে বিজেপি ভাল ব্যবধানে জয়ী হয়।
সাম্প্রতিক দিদিকে বলো মর্মসূচীর প্রথম দফায় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ২ ও ৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকের ব্যবস্থা করেন সোনারপুর উত্তর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পাপাই দত্ত।শুধুমাত্র এই দুটো ওয়ার্ডেই “দিদিকে বলো” কর্মসূচী নেওয়া হচ্ছে তা নয়, বাকি তিনটে ওয়ার্ডেও একই ভাবে “দিদিকে বলো” কর্মসূচী নেওয়া হবে। সাংবাদিক সম্মেলনে পাপাই দত্ত জানান, সর্বভারতীয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জির নির্দেশে গোটা রাজ্যের ব্লকস্তরের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে “দিদিকে বলো” কর্মসূচীকে সফল করতে। অন্যদিকে প্রতি বিধানসভার বিধায়ক এই একই কর্মসূচীর কাজ শুরু করে দিয়েছে। নরেন্দ্রপুর টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেস
ও গড়িয়া টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতিদের নিয়ে এই কাজের সূচনা করা হবে।৬ই সেপ্টেম্বর থেকে ২ নং ও ৬ নং ওয়ার্ডে এই কর্মসূচী শুরু করা হচ্ছে। দলীয় নির্দেশ অনুযায়ী ওয়ার্ডের প্রতিটা মানুষের কাছে গিয়ে অভাব-অভিযোগ, অনুযোগ এবং মতামত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে এবং নথিভুক্ত হবে। এই কর্মসূচীতে মোট সাতটা ধাপ আছে যা পূরণ করতে হবে যার প্রথম ধাপ আজ সম্পন্ন করা হল।প্রথমে আমাদের বলা হয়েছে সাংবাদিক সম্মেলন করে মানুষকে জানানো যে এই কর্মসূচীর কাজের দায়িত্ব তৃণমূল যুব কংগ্রেস ভাগ করে নিয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে যেই ওয়ার্ডে এই কর্মসূচী হবে সেই ওয়ার্ডের তিনজন বা পাঁচজন গুণী মানুষ বা প্রভাবশালী মানুষের সাথে দেখা করে ও কথা বলে তাদের অভাব-অভিযোগ বা উপদেশ শোনার নির্দেশ দিয়েছে দল এবং সেইমত পরবর্তীতে কাজ করতে হবে।তৃতীয় ধাপে রয়েছে সব ওয়ার্ডের পুরানো কর্মীদের নিয়ে সভা করার কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা এই দুটো ওয়ার্ডের পুরানো কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করেছি। দলের তরফে এমনও বলা হয়েছে প্রয়োজনে কোন পুরানো
বুথ কর্মীর বাড়িতে রাত কাটাতে। এছাড়া বলা হয়েছে প্রতিটা ওয়ার্ডে সাধারণ মানুষকে নিয়ে একটা সভার আয়োজন করে জনসংযোগ স্থাপন করে অভিযোগ বা মতামত শোনার জন্য। অভিযোগ শোনার পর আমাদের সাধ্যের মধ্যে যেটা সমাধান করার মত থাকবে তা সমাধান করতে হবে এবং আমাদের সাধ্যের বাইরে যদি কিছু উঠে আসে তা সদর দপ্তর কালিঘাটে ও তৃণমূল ভবনে সুব্রত বক্সি ও অভিষেক ব্যানার্জিকে জানানোর কথা বলা হয়েছে।পরের ধাপে বলা হয়েছে স্থানীয় মানুষকে নিয়ে একটা চা-চক্রের আয়োজন করতে যেখানে সাধারণ মানুষের সাথে আলোচনা করে স্থানীয় অভিযোগ বা সমস্যার কথা জানতে হবে এবং তার সমাধানের রাস্তা করতে হবে। সব শেষে যেই এলাকায় আমরা এই কর্মসূচী পালন করবো সেই
এলাকায় দলীয় পতাকা তুলতে হবে এবং এরসাথে যেই এলাকায় আমরা এই কর্মসূচী পালন করবো সেই এলাকার প্রতিটা মানুষকে দলীয় স্টিকার ও দিদিকে বলো কার্ড হাতে তুলে দিতে হবে যেখানে দিদির সাথে যোগাযোগের নম্বর দেওয়া আছে ৯১৩৭০৯১৩৭০। এককথায় এই কর্মসূচীর মাধ্যমে মানুষের সাথে জনসংযোগ স্থাপনের উপর বেশি জোর দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ। কারণ মানুষের অভিযোগ থাকলে তা উচ্চ নেতৃত্ব পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় না কারণ তার মাঝে অনেক মাধ্যম থাকে যারা সবসময় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই এবার বিনা বাধায় সরাসরি দিদিকে জানাতে পারবেন তার অভিযোগ তা সে ব্যক্তির বিরুদ্ধে হোক আর উন্নয়নের বিরুদ্ধে হোক। সভায় উপস্থিত ছিলেন পাপাই দত্ত, নরেন্দ্রপুর টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি মইনুদ্দিন মন্ডল, ২নং ওয়ার্ডের পুরপিতা অমরেশ সরদার সহ গড়িয়া টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেতৃত্ব সহ অনেকে, উপস্থিত ছিল দলীয় যুব কর্মীরাও। বিজেপিকে আটকাতে জনসংযোগ বাড়াতে এই নয়া কৌশল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাতে কি সুরাহা হবে তা বোঝা যাবে ২০২০ সালে পুরভোটে এবং ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে।