২১শে জুলাই-এর প্রস্তুতি সভায় উঠে এল মমতার ১৯৯৩ সালের দৃঢ়তার কথা
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১৯শে জুলাই ২০২০ : সেই ১৯৯৩ সাল থেকে আন্দোলনটা শুরু করেছিলেন আজকের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেদিন রাইটার্স বিল্ডিং-এর সামনে তৎকালীন বাম শাসনের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও পুলিশমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-এর নির্দেশে পুলিশ গুলি চালালো সেই সময়ের যুব কংগ্রেসের আন্দোলন করতে আসা কর্মীদের উপর। সেদিন সেই পুলিশের গুলিতে জীবন উতসর্গ করেছিলেন সোনারপুরের কামরাবাদের বাসিন্দা রতন মন্ডল।
প্রতিবছর এই দিনটাকে স্মরণ করতে শহীদ দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।কিন্তু এবছর ২১শে জুলাই সমাবেশ করা যাবে না করোনা পরিস্থিতির কারণে। তাই এবছর মমতা ব্যানার্জি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভার্চুয়ালি ২১শে জুলাই পালন করবেন। তিনি ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। আর সেই ২১শে জুলাই সমাবেশের প্রস্তুতি সভা হিসাবে সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় গড়িয়া স্টেশন রোডে এক সভার আয়োজন করে গড়িয়া তৃণমূল কংগ্রেস। আজ সভায় উপস্থিত ছিলেন দঃ ২৪ পরগণা জেলা জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি পল্লব কান্তি ঘোষ, সোনারপুর উত্তর বিধানসভার তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি পাপাই দত্ত, গড়িয়া আই এন টি টি ইউ সি-র আহ্বায়ক পিন্টু দেবনাথ, সোনারপুর উত্তর তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ সভাপতি সমরজিত ব্যানার্জি, সোনারপুর উত্তর জয়হিন্দ বাহিনী সভাপতি বিশ্বজিত দাস (নন্দ), গড়িয়া টাউন জয়হিন্দ বাহিনী সভাপতি অরিন্দম দত্ত, গড়িয়া টাউন তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদ সভাপতি বিশ্বজিত সাউ সহ অনেকে।
সভায় বিশ্বজিত দাস বলেন, কেন্দ্র সরকারের থাকা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি ভারতকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছিলেন তিনি আর কেউ নন প্রনম্য ইন্দিরা গান্ধী। আর ভারতের সেই পদে বসে আরেক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যিনি ভারতকে বিশ্বের দরবারে বিক্রি করে দিতে এসেছেন। আসলে ঠিক তা নয়, নরেন্দ্র মোদী চা বিক্রি করতেন, তাই তিনি ব্যবসাটা ভালোই বোঝেন, নাহলে আজ মহামারীরর দিনে স্যানিটাইজারে জিএসটি লাগু করতে পারেন? পেট্রোল, ডিজেল, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কথা ছেড়েই দিচ্ছে, রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বেসরকারির হাতে বিক্রি করতে সেই প্রধানমন্ত্রী বদ্ধপরিকর। সভায় সমরজিত ব্যানার্জি বলেন, একমাত্র মমতা ব্যানার্জি জানেন দলের শহীদদের স্মরণে সভা করে সম্মান জানাতে। শুধুমাত্র তৃণমূল দলটাই তাঁদের পুরাতন কর্মীদের সম্মান জানাতে পারে। পল্লব কান্তি ঘোষ বলেন, আজকের দিনটা দেখে নিজের গাঁ জ্বালা করে যখন দেখি কংগ্রেস আর সিপিএম যৌথভাবে বিধানচন্দ্র রায়-এর গলায় মালা দিচ্ছে। আমি কংগ্রেস রাজনীতি দিয়েই ছাত্র জীবন শুরু করেছিলাম। কিন্তু আজকের কংগ্রেস আর সেদিনের কংগ্রেসের মধ্যে কোন ফারাক দেখছি না। সেদিনও কংগ্রেসকে আড়ালে বলা হত তরমুজ আর আজ প্রকাশ্যে বলতে হচ্ছে তরমুজ। এই প্রতিবাদেই মমতা ব্যানার্জি কংগ্রেস ত্যাগ করেছিলেন। তারপর থেকে কংগ্রেস ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে চলে গেছে। যেদিন লালু আলম, বাদসা আলম আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মাথা ফাটিয়েছিল সেদিন তাঁকে দেখতে সোমেন মিত্র, সুব্রত মুখার্জি, বরকত গনি খান চৌধুরী, প্রিয়রঞ্জন দাস মুন্সি হাসপাতালে আসেন নি। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির সেদিনের আন্দোলনের কথা কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়ে করেছিলেন। আজ তার পরিণতি সকলে দেখতে পারছেন। আজ সেই মমতা ব্যানার্জি দেশের একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি রাজ্যের প্রতিটা মানুষের জন্য প্রকল্প এনেছেন, প্রতিটা বাড়ির জন্য প্রকল্প এনেছেন, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সকলের সুরক্ষার জন্য প্রকল্প এনেছেন।