বিজেপি সাংসদ ও বিধায়কদের শিক্ষার মান দেখে শিশুরাও হাসছে
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ২৮শে জানুয়ারি ২০২১ : রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বদের কিছুটা শিক্ষাগত মান থাকা প্রয়োজন তা এবার স্পষ্ট হল। রাজ্যে বিজেপি রাজনীতি করতে এসে সেটা আরও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। কেন বলছি? সেটা পুরো প্রতিবেদনটা পড়লে বোঝা যাবে। বিজেপি-র সাংসদ থেকে বিধায়কদের বেশ কিছু মন্তব্য মানুষকে আরও বিভ্রান্তিতে ফেলে দিচ্ছে। আর তাদের মন্তব্য শুনে ক্লাস ৬ থেকে ১০ ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা হাসছে আর বলছে, “আমরা কি তবে পাঠ্যপুস্তকে ভুল পড়ছি।”
একসময় সর্বভারতীয় নেতা ও ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে এসে বলে গেলেন “রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে জন্মেছিলেন।” মানুষ ভেবেছিল এটা আবার কোন নতুন তথ্য। এরপর আবার এক বিজেপি নেতা মন্তব্য করলেন রবীন্দ্রনাথ নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন কিন্তু তাঁকে সেভাবে কেউ চিনতো না। আবার বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রামানিয়ম স্বামী প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি জানালেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জাতীয় সঙ্গীত বদল করতে। এই প্রথম বোধহয় সারা বিশ্বে এমন একটা ঘটনা বিরল।
এরপর বিজেপি সাংসদদের যা সব মন্তব্য শোনা গেছে তা মানুষকে আরও হাসিয়েছে, বিজেপি রাজ্য মহিলা সভানেত্রী লকেট চ্যাটার্জি ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি মানুষের সামনে তুলে ধরলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসগর সহজপাঠ লিখেছেন। উফঃ এরা কি আদৌ স্কুলের দরজায় প্রবেশ করেছে, প্রশ্ন উঠেছে সকলের মনে। আর সাংসদ ও শিল্পী বাবুল সুপ্রিয় তো আরও মারাত্বক কথা বললেন। তিনি বললেন, সতীদাহ প্রথা রদের চেষ্টা করেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসগর। হে ভগবান! রামমোহন রায় যদি আজ থাকতেন, কোথায় নিজের মুখ লোকাতেন কে জানে? এই দুজন সাংসদ পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কিন্তু। আগের দুজন নাহয় তর্কের খাতিরে বলা যেতে পারে এই রাজ্যের মানুষ নয়। তাও সাংসদ হিসাবে এমন মন্তব্য করা মানায় না।
এবার আসি একেবারে সদ্য ঘটে যাওয়া ঘটনায়। তৃনমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়া সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, “আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে” কবিতার লাইনটা জীবনানন্দ দাসের লেখা।তবে মাধ্যমিকে পাঠ্যরত ছাত্রছাত্রীরা কি তাদের পাঠ্যক্রমে ভুল শিখছে যে “অন্নপূর্ণা ও ঈশ্বরপাটিনি” কবিতাটা ভরতচন্দ্রের লেখা? তবে কি এই যোগ্যতার পরিচয় পেয়ে বাধ্য হয়েই স্ত্রী সুজাতা খাঁ তাঁকে ছেড়ে ত্রিনমুলে যোগদান করলেন যার ফল হল এখন বিবাহ বিচ্ছেদ?
এই নেতৃত্বরা যদি রাজ্যের হাল ধরতে চায় তবে তো আগামী প্রজন্ম সবই প্রকৃত মুর্খ তৈরি হবে। বর্তমানে বিজেপি নেতৃত্বের অনেকে মন্তব্য করেন যে তৃনমূল সরকারের আমলে শিক্ষার মান খুব নেমে গেছে। মানছি তাদের মন্তব্য যুক্তিহীন নয়, কিন্তু তাদের আমলে কি এর থেকে আরও ভালো হবে না অধঃপতন হবে? এটাও তো একটা বড় প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।সেই দলে আরও দুই পন্ডিত যোগ দিয়েছে একজন শোভন চ্যাটার্জি আর অন্যজন শুভেন্দু অধিকারী। এখন অপেক্ষা এনারা কি নতুন তথ্য জোগাড় করে মানুষের সামনে তুলে ধরেন?