বোড়াল টাউনের তৃণমূল যুব সভাপতি ক্ষোভে বিজেপি যোগ দিল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ৩০শে আগস্ট ২০১৯ : একসময় ফরওয়ার্ড ব্লক করেছে বলে জানা যায়, এরপর যখন রাজ্যে পালাবদল হওয়ার মত অবস্থা ঠিক তার আগেই দলবদল করে যোগ দেয় তৃণমূল। এবার ২০১১ সাল থেকে তৃণমূল দলের সদস্য ছিলেন। বেশ চলছিল, প্রথম দলে যোগ দিয়েই রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩৫ নম্বরের তৃণমূল যুব সভাপতির পদ আদায় করে নেন। সেই সময় তৃণমূল যুবা সংগঠনের সদস্যদের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাথে এক করে দেন স্বয়ং মমতা ব্যানার্জি এবং তা কার্যকরি করে অভিষেক ব্যানার্জি। ঠিক সেই সময় তৃণমূল যুব কংগ্রেস নিজেদের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে চারিদিকে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নতুন কমিটি তৈরির কাজে হাত দিয়েছে। সেই সময় তিনি ওয়ার্ড তৃণমূল যুব কংগ্রেসের দায়িত্ব লাভ করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাজপুর সোনারপুর ওয়ার্ডে তৃণমূল খারাপ ফল করে। এই ওয়ার্ডে বিজেপি বড় মার্জিনে জয়ী হয়। এই খারাপ ফলের একটাই কারণ এই ওয়ার্ডের পুরপিতা গৌরহরি দাস বলে সকলে মনে করছে। প্রথমে তিনি ওয়ার্ডের পুরপিতা গৌরহরি দাসের কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন না বলে তাঁর সাথে প্রায়ই মতবিরোধ হত। কিন্তু দিন যত এগোতে থাকে ততই তিনি গৌরহরি দাসে ঘনিষ্ট হয়ে ওঠেন কারণ তিনি দেখে নিয়েছিলেন গৌরহরি দাসের সাথে থাকলে কামানোর জায়গাটা পোক্ত হবে।এরপর তিনি তৃণমূল জেলা নেতৃত্বের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে একেবারে বোড়াল টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতির পদও আদায় করে নেন।
কিন্তু তারপর লোকসভায় তৃণমূলের ফল খারাপ হল। বোড়াল টাউনের বাকি ওয়ার্ডের ফল তেমন খারাপ না হলেও ৩৫ নং ওয়ার্ডে একেবারে হার।এবার এল মূল সময়, কামানোর রাস্তা বন্ধ থাকলে চলবে না। তাই লোকসভা নির্বাচনে ফল খারাপ হওয়ার সাথে সাথে তিনি ফের পালটি খেলেন, এবার সরাসরি বিজেপিতে গিয়ে যোগ দিলেন। তিনি ভেবেই নিলেন ২০২০ সালে পৌরসভা নির্বাচন, আর এই ওয়ার্ডের যা পরিস্থিতি তাতে এবার যদি জয়ী প্রার্থী হিসেবে গৌরহরি তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হয় জয়ের সম্ভবনা একেবারেই নেই। ২০১৫ সালে যারা গৌরহরির পাশে থেকে জয় এনে দিয়েছিল তাঁরা কেউ আজ আর তাঁর সাথে নেই। তাই পৌরভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিলে প্রার্থী হওয়ার সম্ভবনা প্রবল।যাকে নিয়ে এতক্ষন চর্চা হচ্ছিল তিনি আর কেউ নন একসময়ের ৩৫ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি এবং পরবর্তিতে বোড়াল টাউনের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ সাউ। সংগঠক হিসাবে আমি যতদিন তাঁকে দেখেছি তেমন কোন ভাল সংগঠক নন। কিন্তু সুযোগ তাকে জায়গা করে দিয়েছে এলাকার নেতৃত্ব দেওয়ার তো সেই সুযোগ ছাড়ে কে? এর ফল বলবে ২০২০ সালের পৌরভোট এবং ২০২১ সালে বিধানসভা ভোট। এই ওয়ার্ডের একটা সুবিধা আছে, এই ওয়ার্ডের যারা বাসিন্দা তাঁরা অধিকাংশ অবাঙালী অর্থাৎ বিহারি সম্প্রদায় আর সেদিকে রাজেন্দ্র সেই সম্প্রদায়ের মানুষ।বোড়াল টাউন যুব তৃণমূলের বাকি সদস্যদের বক্তব্য এরা হল সব ধান্ধাবাজ। ডানপন্থী দল আবেগ থেকে হয়। যারা বামপন্থী দল করেছে তাঁরা কখনো ডানপন্থী দলে টিকতে পারবে না, রাজেন্দ্র তারই একটা জ্বলন্ত উদাহরণ।এরকম আরও কজন আছে যারা বামপন্থী দল থেকে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিল তারাও এবার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায়। সময় বলবে।এখন দেখার রাজেন্দ্রকে মোকাবিলা করতে সোনারপুর বিধানসভার তৃণমূল ও তৃণমূল যুব নেতৃত্ব কি ব্যবস্থা নেয়।