করোনা দুর্ভোগে অসহায় দুঃস্থ মানুষের সাহায্যে রক্ষাকালী মন্দির
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১৩ই এপ্রিল ২০২০ : কথায় আছে “মা সহায়”, কথাটা যে কতটা বাস্তব তা মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখনই বোঝা যায়। আজ করোনার থাবায় সারা পৃথিবী চোখের জল ফেলছে কারণ সর্বত্র করোনার কারণে মৃত্যু মিছিল। গোটা বিশ্বে প্রায় ২১০ টা দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৮, ৫৭, ৩১৭ জন এবং মারা গেছেন ১,১৪,৩৫৮ জন আর করোনায় আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়েছেন ৪,২৮,৭৩২ জন। করোনায় আক্রান্তের তালিকায় প্রথমেই রয়েছে আমেরিকা যেখানে আক্রান্ত ৫,৬০,৪৩৩ আর মৃত ২২,১১৫ জন। এরপর ইতালিতে মৃত্যু হয়েছে ১৯, ৮৯৯, স্পেন ১৭২০৯, ফ্রান্স ১৪,৩৯৩, ইংল্যান্ড ১০, ৬১২, ইরান ৪,৪৭৪, বেলজিয়াম ৩,৬০০, জার্মানি ৩,০২২, নেদারল্যান্ড ২,৭৩৭, সুইজারল্যান্ড ১,১০৬, ব্রাজিল ১,২৩০, টার্কি ১,১৯৮। এবার যদি ভারতের পরিসংখ্যানটা দেখি, এখানে আক্রন্তের সংখ্যা ৯,২৪০ আর মৃত্যু হয়েছে ৩৩১ জনের। বাংলায় করোনার প্রকোপটা কিছুটা কম। এখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫২ কিন্তু ভারতের বাকি রাজ্যের মধ্যে সবার উপরে রয়েছে মহারাষ্ট্র ১৯৮৫, তারপরে আছে দিল্লি ১১৫৪, তামিলনাডু ১০৪৩, রাজস্থান ৮০৪, মধ্যপ্রদেশ ৫৬৪, গুজরাত ৫১৬, তেলেঙ্গানা ৫০৪, উত্তরপ্রদেশ ৪৮৩, অন্ধ্রপ্রদেশ ৪২৭ এছাড়া আরও আছে।
এরকম একটা কঠিন পরিস্থিতিতে যখন মানুষ এখন প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া। মানুষ এখন নিজের ও পরিবারের জঞ্জ খাদ্য সংগ্রহের জন্য দিশাহারা।সকলের একটাই উদ্দেশ্য কি করলে আর কোথায় গেলে নিজে ও পরিবারকে বাঁচাতে পারবে। রাজ্য সরকার এই রাজ্যের মানুষকে বাঁচাতে রেশনে আগামী ছয় মাস বিনা পয়সায় চাল ও গম দিচ্ছে কিন্তু যাদের রেশন কার্ড নেই তাঁরা কি করবেন? যাদের কার্ড আছে কিন্তু ডিজিটাল কার্ডের জন্য আবেদন করেও ডিজিটাল কার্ড আসে নি তাদের জন্য সরকার অস্থায়ী ভাবে খাদ্য সরবরাহের কথা ঘোষণা করেছেন, এমনকি যারা ডিজিটাল কার্ডের আবেদনই করে নি তাদের জন্য সরকার চিন্তাভাবনা করছেন।কিন্তু এই মুহুর্তে জীবন বাঁচবে কিভাবে? বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল (বিশেষ করে তৃণমূল থেকেই বেশি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে) এই অসহায় মানুষদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। কিন্তু আগেই যে বললাম রাখে হরি মারে কে? কথাতে আছে “পেট দিয়েছেন যিনি, আহার দেবেন তিনিই” তাই গড়িয়ায় বাইপাস ঢালাই ব্রিজ সংলগ্ন রক্ষাকালী মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে দুঃস্থ, অসহায় মানুষদের খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা প্রায় ৫০০ জনকে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেন কিন্তু খুবই শৃঙ্খলার সাথে।
সকলকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এই খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয় মন্দির কতৃপক্ষ। এব্যাপারে সভাপতি অমৃতা লাল বালি ও সম্পাদক অশোক প্রসাদ জানান, আমরা মন্দির সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকার দুঃস্থ, অসহায় ও ভাড়াটে এমন মানুষদের চিহ্নিত করে তাদের হাতে আগে থাকাই কুপোন দিয়ে এসেছিলাম। আমরা আজ মন্দির কমিটির সকল সদস্যদের সহযোগিতায় ও উপস্থিতিতে সরকারি সব রকম স্বাস্থ্য বিধি মেনেই প্রায় ৫০০ জনকে খাদ্য সামগ্রী দিতে পেরেছি কারণ আমাদের এবছরের করোনার জন্য মায়ের উৎসব করা যায় নি তাই সেই জায়গায় আমরা মানুষের পাশে এসে সাহায্য করেছি। প্রয়োজনে আরও করবো।