করোনায় লকডাউন পরিস্থিতিতে মহামায়াপুর মিলন তীর্থে বিহন্ডলারা খাদ্য সামগ্রী তুলে দিল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ৩০শে মার্চ ২০২০ : সারা দেশে মহামারীর একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, মানুষ আতঙ্কে জীবন কাটাচ্ছে, কখন কি হয়ে কেউ জানে না।এখনও পর্যন্ত সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০৫০০ যার মধ্যে ভারতের আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০৮ এবং মৃতের সংখ্যা ৩২। বাংলায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ২ ও আক্রান্তের সংখ্যা ২২। কিন্তু সব থেকে যেটা খুশির খবর কলকাতার প্রথম তিন জন করোনা আক্রান্ত রোগীর নমুনা পরীক্ষায় পজিটিভ নেই। তাঁরা তিনজনই আগামীকাল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবে।এই করোনা আতঙ্কে এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অনেক আগে থেকে পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং যার জন্য সারা ভারতে প্রথম রাজ্য ছিল পশ্চিমবঙ্গ যেখানে লকডাউন চালু হয়। এরফলে মানুষের দৈনন্দিন খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহে এবং রোজগারে টান পড়েছে ঠিকই কিন্তু বাকি রাজ্যগুলো থেকে আক্রান বা মৃত্যু অনেক কম হয়েছে।
তবে তৃণমূল সরকার এইরকম পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চেষ্টা করে গেছেন যতটা পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। সরকারের সাথে তৃণমূল নেতৃত্ব থেকে বিভিন্ন এলাকার কর্মী ও নেতারা মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে। কোথাও চাল, ডাল, তেল, চিনি, সোয়াবিন, ডিম, আটা তুলে দেওয়া হয়েছে।
সাম্প্রতিক সোনারপুর উত্তর বিধানসভা অন্তর্গত রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ২৮ নং ওয়ার্ডে মহামায়াপুর মিলন তীর্থ ক্লাবে এই বিধানসভার বাসিন্দা কিছু বিহন্ডলা এই ক্লাবের বেশ কিছু দুঃস্থ মানুষকে চাল, ডাল, আলু ও পেঁয়াজ তুলে দেয়। এরকম একটা দৃশ্য ভাবা যায় না। এব্যাপারে শঙ্করী জানায়, আমরা সারা বছর এইসব এলাকার মানুষের কাছে এসে সাহায্য নিয়ে যাই। তাদের সাহায্য দিয়েই আমাদের দিনযাপন হয়। আজ গোটা বিশ্বে মহামারী শুরু হয়েছে। এই মানুষগুলোকে বাঁচানো আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এই মানুষগুলো বাঁচলে আবার আমরা খেতে পাবো। আমাদের গুরুমা ববিতা মাসির নির্দেশে ও সহযোগিতায় আজ ১০০০ কেজি চাল, ৪০০ কেজি আলু ও ১২৫ কেজি ডাল সকলের মধ্যে দান করা হয়। এই অঞ্চলে তো সকলে বড়লোক নয়, অনেক গরীব রিকশাওয়ালা, ফেরিওয়ালা, দিনমজুর, বাড়িতে কাজের কর্মীদের সাহায্যের জন্য আমরা সকলে মিলে হাত বাড়িয়েছি। এছাড়া এই ক্লাবের সব সদস্যরাও আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছে।
ক্লাব কতৃপক্ষের তরফে সন্টু জানান, প্রথমে ঠিক করা হয়েছিল ৩০০ জন মানুষকে দেওয়া হবে কিন্তু মানুষের ঢল নেমে যায়, বাধ্য হ্যে ক্লাবের তরফ থেকে আরও অতিরিক্ত খাদ্য সামগ্রীর যোগান দিয়ে বাকি মানুষদের সাহায্য করা হয়। এই মহতি সমাজসেবামূলক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এই ওয়ার্ডের পৌরমাতা নমিতা দাস যার সহযোগিতা আমরা সব অনুষ্ঠানে পেয়ে থাকি। এই অনুষ্ঠানে বিহন্ডলাদের উদ্যোগ সকলকে ছুঁয়ে যায়। তাঁরা এমনও বলে প্রয়োজনে মানুষ বেঁচে থাকুক, আমরা মরে যাই। মানুষ না বাঁচলে আমাদের বেঁচে থাকা দায় হয়ে উঠবে, তাই ভগবানের কাছে এই প্রার্থনা করি এই করোনা ভাইরাসে প্রয়োজনে আমাদের নিয়ে নাও কিন্তু শিশু ও মানুষকে বাঁচিয়ে দাও। কতবড় আত্মত্যাগ ভাবা যায়।