মহানায়ক উত্তম কুমার নিজের গলায় রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন
পেরেনিয়াল রেকর্ডের সৌজন্যে আজ উত্তমকুমারের নিজের কণ্ঠে গাওয়া অনেকগুলি রবীন্দ্রসঙ্গীতই শুনতে পাওয়া যায় । নয়তো আমরা আজকের যুবসমাজ এতদিন শুধু শুনেই এসেছি যে উত্তমকুমার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ গাইতেন । রবীন্দ্রনাথের গল্প অবলম্বনে উত্তমকুমার কয়েকটি ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন এবং রবীন্দ্রনাথকে সম্পুর্ণ বুঝে ওঁর গল্প নিয়ে ছবি করবার দক্ষতা সেই ছবিগুলোর পরিচালকদের মধ্যেও ছিল । কিন্তু ছবিগুলো দর্শকের মন ছুঁতে পারেনি যতটা শরৎকাহিনী থেকে নির্মিত উত্তমের অভিনীত ছবিগুলো ছুঁয়েছিল । কিন্তু আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি এখনকার যুবসমাজের কাছে ‘নিশীথে’ বা ‘বউ ঠাকুরানির হাট’ কিন্তু উত্তমকুমারের অন্যান্য মুভিগুলোর মতই সমান জনপ্রিয় ।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন উত্তমবাবুর প্রিয় সাহিত্যিক ।
রবীন্দ্রনাথের গান এবং কবিতা ছিল উত্তমকুমারের নিত্যদিনের সঙ্গী । উত্তমকুমারের কাব্যরসে সিক্ত অভিনয়ের নেপথ্যেও রবীন্দ্রনাথ ওতপ্রোতভাবে জড়িত । কারণ উত্তমকুমার বাল্যকাল থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড়ো হয়ে উঠেছিলেন, উত্তমকুমারের জ্যাঠামশাই ছিলেন একজন নাটকপাগল মানুষ ।
আর নাটকের প্রসঙ্গ উঠলেই সেখানে অবধারিতভাবে রবীন্দ্রনাথের কথা চলে আসে । ফলে রবীন্দ্রনাথকে গভীরভাবে জানবার প্রক্রিয়া উত্তমের মধ্যে অনেক ছোট থেকেই চলে আসছিল । সিনেমার নায়ক হওয়ার পর উত্তমকুমারের আর্থিক অবস্থা যখন অনেকটা সচ্ছল হলো তখন বহু বইপত্রর এমনকি রবীন্দ্রনাথেরও বই সংগ্রহ করে সেগুলো উত্তমবাবু পড়ে ফেলেছিলেন । ওঁর এই বই পড়বার নেশাটা জীবনের শেষদিন অবধিই বজায় ছিল ।