পূর্ব ভারতে কলকাতায় প্রথম অ্যাপোলো পুরুষ বন্ধ্যাত্ব ও পুরুষত্বহীন ক্লিনিক চালু করল
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, কলকাতা, ৯ই ডিস্বম্বর ২০১৯ : সাম্প্রতিক কলকাতায় অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতাল পূর্ব ভারতে প্রথম পুরুষ বন্ধ্যাত্ব ও পুরুষত্বহীন ক্লিনিক চালু করল। সবচেয়ে আধুনিক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব ও পুরুষত্বহীনতা ক্লিনিকে যে সব পুরুষেরা যৌন মিলনের জন্য পুরুষাঙ্গের দৃঢ়তার অভাব এবং বীর্যপাতের সমস্যায় ভোগেন এবং যাদের পুরুষাঙ্গ বিকৃতি আছে তাদের অপারেশনের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।
ম্যাসাচুসেটস মেল এজিং স্টাডির তথ্য অনুযায়ী ৪০ থেকে ৭০ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে প্রায় ৫২% যৌন মিলনের জন্য পুরুষাঙ্গের উত্থানের অভাব থেকে ভোগেন। এদের মধ্যে ১৭%-এর সমস্যা সামান্য। ২৫% পুরুষের সমস্যা মাঝারি ধরনের। ১০% পুরোপুরি উত্থানশক্তি রহিত। পুরুষাঙ্গের উত্থানশক্তি বা দৃঢ়তা না থাকার সমস্যাকে অবহেলা করা উচিত নয়। এর প্রধান কারণ হল কার্ডিওভাস্কুলার রোগের যে ঝুঁকি এই রোগেরও একই ঝুঁকি। এই সমস্যা মেটাতে বর্তমানে অনেক উন্নত চিকিৎসা এসেছে যেমন ইনট্রাসাভারনাস ইঞ্জেকশন, ভ্যাকুয়াম ইরেকশন ডিভাইস, পেনাইল প্রস্থেসিস (শরীরে কোনও কিছু জুড়ে দেওয়া হয়)। এছাড়া মেডিক্যাল সাপোর্ট দেওয়া হয় হরমোনের চিকিৎসায়। যেমন টেস্টোস্টেরন বদল ও মনস্তাত্বিক-যৌন কাউন্সেলিং। পুরুষাঙ্গের উত্থানশক্তি ফেরাতে মেডিকেটেড ইউরেথ্রাল সিস্টেম দিয়েও রোগীদের সাহায্য করে অ্যাপোলো। এই তথ্য জানান, কলকাতা অ্যাপেলো হাসপাতালের ইউরোলজিস্ট ডাঃ অতনু জানা।
পুরুষের বন্ধ্যাত্ব ও প্রজনন ক্ষমতার অভাব ক্লিনিকে যেসব রোগের চিকিৎসা হবে তা হল – পুরুষাঙ্গের উত্থানশক্তির অভাব সংক্রান্ত, পুরুষদের দৃঢ়তা আনতে অক্ষমতা এবং সন্তোষজনক মাত্রায় যৌন মিলনের জন্য প্রয়োজনীয় দৃঢ়তা ধরে রাখতে না পারা। দুটি ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অক্ষমতার চিকিৎসা করা হয় যেমন, বীর্যপাতের অক্ষমতা ও পুরুষাঙ্গ বিকৃতি।
পুরুষাঙ্গের উত্থানশক্তিহীনতাজনিত বড় ধরনের সমস্যার মূল কারণ হল মনস্তত্ব, হৃদরোগজনিত (কার্ডিওভাস্কুলার, হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস এবং শ্রোণিতে বড় ধরনের অপারেশন অথবা রেডিওথেরাপি, নার্ভাস সিস্টেমে গোলমাল থাকা যেমন একাধিক নার্ভ অতিরিক্ত কঠিন হয়ে যাওয়া, পার্কিনসন, টিউমার, স্ট্রোক, শিরদাঁড়ার রোগ, পেরিফেরাল, টি২ডিএম, মদ্যাশক্তি, দেহের অ্যানাটমি সংক্রান্ত রোগ, পেরোনিজ ডিজিজ, লিঙ্গে ফ্র্যাকচার, জন্ম থেকেই পুরুষাঙ্গ বাঁকা থাকা, হরমোন সংক্রান্ত রোগ, হাইপার ও হাইপ্রো থাইরয়েডের সমস্যা এবং কাশিংস ডিজিজ।
বর্তমান সময়ে মানুষ এতটাই কাজের চাপের মধ্যে থাকে যে এর ফলে মানসিক ও শারীরিক চাপে পুরুষাঙ্গের উত্থানশক্তিহীনতার রোগের প্রকোপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ক্রমশ বেশি বেশি করে কমবয়সীদের মধ্যেও এই রোগ ছড়াচ্ছে। ক্রমশ এটা হয়ে দাড়াচ্ছে যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বড় ধরনের একটা সমস্যা। এটা গুরুতর হৃদরোগের একটা সূচক, যা থেকে শুরু হতে পারে কার্ডিওভাসকুলার রোগ। যৌন মিলন মানুষকে আনন্দ দেয়, আবার যৌন মিলনে অক্ষমতা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বড়সড় গোলমালের সূচক। এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন হাসপাতালের সিনিয়র ইউরোলজিস্ট ডাঃ অমিত ঘোষ।
পুরুষাঙ্গের উত্থানশক্তিহীনতার চিকিৎসার জন্য যে কোনও ব্যক্তির উচিত জীবনধারণের নিয়মকানুনে পরিবর্তন আনা যেমন ধূমপান ছাড়তে হবে, শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে, নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে, অতিরিক্ত মদ্যপান কমাতে হবে, যেমন ইচ্ছা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করতে হবে, ডিএম, এইচটিএন দ্বারা হৃদরোগকে নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে। পুরুষাঙ্গ বিকৃতি থাকলে তার চিকিৎসা করছে অ্যাপোলো অপারেশনের মাধ্যমে। যার মধ্যে পড়ে উত্থানের জন্য পুরুষাঙ্গে কিছু অনুপ্রবেশ করানো, শুক্রনালির শিরা সংশোধন, অণ্ডকোষ থেকে ইউরোথ্রায় বীর্য বহন করে নিয়ে যায় যে তিউব তাতে কোনও বাধা থাকলে তা সরিয়ে দেওয়া, পুরুষাঙ্গ বাঁকা থাকলে তা ঠিক করা। এতে বোভাইন পেরিকার্ডিয়াল প্যাচ ব্যবহার করা হয়। প্রচারে : অ্যাড ফ্যাক্টর।