প্রয়াত দাদা খোকনের স্মরণে বিরল রক্তদান শিবিরের আয়োজনে বাবলু ঘোষ
অনিকেত রায়, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৯ : সোনারপুর উত্তর বিধানসভা অন্তর্গত রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩৫ নং ওয়ার্ডে মাস খানেক আগে খোকন ঘোষের মৃতদেহ ভেসে ওঠে স্থানীয় একটা খাল থেকে। মৃত্যুর সাথে যুক্ত থেকে রানিয়া তৃণমূল ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি উত্তম ঘোষের নামে খোকন ঘোষের পরিবার থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে সেই যে পুলিশের মদতে উত্তম ঘোষ গাঁ ঢাকা দিয়েছে আজও সে স্বস্ত্রীক ঘর ছাড়া।কিন্তু ঘরের বাইরে থাকলেও পুলিশের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলে খবর। বাইরে থেকে তাকে নিরপরাধ প্রমাণ করার জন্য পোস্টমর্টম রিপোর্ট জালিয়াতি করার জন্য প্রভাব খাটিয়েছে।সেখানে হত্যার কথা কোথাও উল্লেখ না করে বলা হয়েছে মদ খেয়ে খালে পড়ে যায় খোকন। কিন্তু প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায় খোকন ও উত্তমের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়।এরপর খোকনকে মুখে অ্যাসিড ঢেলে মারা হয়।তর্কের খাতিরে সবটাই ছেড়ে দিলাম, মৃত্যু হল খোকনের কিন্তু স্বস্ত্রীক এলাকা ছাড়া হল শুধু উত্তম ঘোষ। আর তো কেউ পালায় নি। এই ঘটনায় সন্দেহ করে পুলিশ একজন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও পুলিশ ঘটনা জানতে পারে।
যাই হোক এটা এখন পুলিশের তদন্তের বিষয়। দাদার মৃত্যুর উদ্দেশ্যে এবছর যেখানে দাদাকে হত্যা করা হয়ছিল সেখানে দাদার মুর্তি উন্মোচন করে ভাই বাবলু ঘোষ। পাড়াতে খোকনকে লোকে ডাকতো “পাগলা” বলে। গত দুবছর থেকে স্থানীয় ক্লাব রানিয়া সহযাত্রী সংঘের সহযোগিতায় বাবলু ঘোষ ১ লা সেপ্টেম্বর এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে।এবছর ছিল তার দ্বিতীয় বর্ষ। গতবছর রক্তদান করে প্রায় ৩৫০ জন আর এবছর ৩৩২ জন। কিন্তু সব থেকে যেটা বিরল ঘটনা, সব জায়গায় রক্তদান করা
মানে একটা উপহার থাকবেই, হয় হেলমেট, নাহয় প্রেসার কুকার বা কম্বল অথবা ননস্টিক কড়াই বা ইনডাকশান কুকার সহ অনেক কিছু। উপহার দিয়েও সেখানে ১০০ জন রক্তদাতা আনতে কালঘাম ছোটে উদ্যোক্তাদের কিন্তু বাবলু ঘোষ কোন উপহার না দিয়েও এতমানুষকে পাশে পান। কেন? তা শুধু তার সমাজসেবামূলক মানসিকতার জন্য। এলাকায় কার মেয়ের বিয়ে হবে না, কার চিকিৎসা হবে না, কার বাড়ি নেই, কার পড়াশুনো হচ্ছে না সবেতেই পাশে পায় বাবলু ঘোষকে। এদিন পুরষ ও নারী সকলেই স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে উপস্থিত ছিল রক্তদানের জন্য। অনুষ্ঠানে শুভ উদ্বোধন করেন স্থানীয় পৌরপিতা
গৌরহরি দাস, কানাই কর্মকার সহ অনেকে। এরপর এক এক করে স্থানীয় নেতৃত্ব সহ সোনারপুর অঞ্চল ও কলকাতা অঞ্চলের বহু নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক অম্বরনাথ ভট্টাচার্য ও সারেগামাপা খ্যাত রনিত মন্ডল।রক্তদান শিবির সংলগ্ন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বোড়াল টাউনের তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পাদক দিলীপ ব্যনার্জি, ৩৫ নং ওয়ার্ডের ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক আশীষ কর্মকার ও সহ সভাপতি গোপাল দাস, ৩৫ নং ওয়ার্ডের জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি তপন কর্মকার, ৩৫ নং ওয়ার্দের
যুব তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত দাস, সৌরভ প্রধান সহ অগুন্তি স্থানীয় নেতৃত্ব।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দঃ ২৪ পরগণা জেলা জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি পল্লবকান্তি ঘোষ, কলকাতা কর্পোরেশনের ১১৩ নং ওয়ার্ডের পৌরপিতা গোপাল রায়, কলকাতা কর্পোরেশনের তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরি সভাপতি রবিউল আলি মন্ডল, কলকাতা কর্পোরেশনের তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরি সভাপতি গৌতম মুখার্জি, রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৩১ নং ওয়ার্ডের সম্পাদক লাল্টু দাস (সুশান্ত দাস) সহ অনেকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন
রানিয়া সহযাত্রী সংঘের সদস্যদের মধ্যে মহেশ প্রসাদ সাউ (সহ সভাপতি), প্রদীপ দাস (সম্পাদক), কল্যান কুমার সাউ, শান্তনু দে (সহ সম্পাদক), প্রদীপ সরকার, সঞ্জয় শর্মা, দেবু বেরা, দেবাশিষ দাশ সহ অনেকে।বাবলু ঘোষ ও স্থানীয় ক্লাবের পরিচালনায় খুবই সুষ্ঠভাবে দ্বিতীয় বর্ষের রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয়। গোপাল রায় তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন অসহায় মানুষের সাহায্যের জন্য যারা
সমাজসেবার মাধ্যমে যুক্ত থাকে জনসাধারণ থেকে সকলে তার পাশে থাকে তা ফের একবার প্রমাণ করে দিল বাবলু।স্বপ্নপূরন বৃদ্ধাশ্রমের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠানে মঞ্চ থেকে দুঃস্থ, অসহায় প্রায় ১০০০ জন মানুষকে শাড়ী, ধুতি বা মশারী তুলে দেওয়া হয়।মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শোকার্ত আরেক অসহায় মা, সেই মা যিনি তাঁর সন্তান হারিয়েছেন শুধুমাত্র হিংসার কারণে সেই খোকন ঘোষকে হত্যা করা হয়েছিল সেই খোকন ঘোষের সন্তানহারা মা স্বপ্না ঘোষ। তিনি প্রথমে দরিদ্র, অসহায় ও দুঃস্থ মানুষদের হাতে বস্ত্র তুএ দেন।