স্বয়ং নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর গানের বড় ভক্ত ছিলেন, তার নাম রুমা গুহঠাকুরতা
অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা নিউজ, কলকাতা, ২রা জানুয়ারি ২০২৪ : ‘ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম’ কিংবা বিস্তীর্ণ দু’ পারে অসংখ্য মানুষের’,গানগুলি শুনলে আমাদের মনে আসবে ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের কথা, রুমা গুহঠাকুরতার কথা।
আমরা বলছি রুমা গুহঠাকুরতার জননী সতীদেবীর কথা!
যিনি গত শতাব্দীর তিন ও চারের দশকে বাংলা গানের বিভিন্ন ধারায় গান গেয়ে বিশেষ উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করেছিলেন।
চারুচন্দ্র দাসের কোনও পুত্রসন্তান ছিল না,চার কন্যার মধ্যে সতী দেবী দ্বিতীয়, সর্বকনিষ্ঠাও সন্তাটিও যতেষ্ট বিখ্যাত, প্রবাদপ্রতিম চিত্রপরিচালক সত্যজিৎ রায়ের সহধর্মিণী বিজয়া রায়। বাড়িতে চার ভগিনী সংগীতের আবহে বড় হয়েছেন,যখন সুযোগ হয়েছে নানা ধরনের গান শিক্ষা করছেন।
তবে খুব ছোট বয়সে সতী’র দৃষ্টিশক্তির ক্ষীণবশত নিয়মিতভাবে স্কুল কলেজে শিক্ষালাভের সুযোগ না হলেও শিশুকাল থেকেই ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যাস গড়ে ওঠে। পরে নিজের চেষ্টায় যতেষ্ট পড়াশোনা করেছেন। কলকাতায় যখন এসেছেন,এককালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গায়িকা পিসিমা কনক বিশ্বাস(দাশ)।
কাছে গান শিখেছেন। আর সেই সুত্রেই জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে যাতয়াত, রবীন্দ্রনাথের স্নেহ লাভ ও দিনেন্দ্রনাথের কাছে গান শেখার সুযোগ পেয়েছেন।
১৯২৭,সতীদেবীর বিয়ের এক বছর আগে সরলা দেবী ও ইন্দিরা দেবীর পরিচালনায় কলকাতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতিনাট্য ‘মায়ার খেলা’ অভিনীত হয় । ‘শান্তার’ভূমিকায় অভিনয় ও গান করে সতী সবার প্রশংসা অর্জন করলেন। গ্ৰামোফোন কোম্পানিও ‘মায়ার খেলা’র চারটি গান সতীদেবী কে দিয়ে রেকর্ডও করায়।বলা বাহুল্য গানগুলো যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছিল।
সতী দেবী,গ্ৰামোফোন রেকর্ডের একজন নাম করা শিল্পী । তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্র -সংগীত , অতুলপ্রসাদের গান, হিমাংশু দত্তর সুরারোপিত গান বেশ জনাদৃত হয়েছে।একই ভাবে সতীদেবীর গাওয়া হিন্দী ভজন গোটা ভারতবর্ষে যথেষ্ট প্রচারিত ও প্রশংসিত । গুণগত বিচারে গানগুলি কত খানি রসোত্তীর্ণ হয়েছিল তার সাক্ষ্য বহন করে দুষ্প্রাপ্য রেকর্ডগুলি।যারা গানগুলি শুনেছেন তারাই যথার্থ উপলব্ধি করতে পারেন।
উদয়শঙ্করের আহ্বানে তাঁর ‘আলমোড়া কালচার সেন্টারের ‘ সংগীত শিক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন দক্ষতার সঙ্গে,আবার বোম্বেতে পৃথ্বীরাজ কাপুরের পৃথ্বী থিয়েটার্সে নিয়মিত অংশ নিয়েছেন।
বিয়ে করেছিলেন বিখ্যাত বিখ্যাত সাংবাদিক সত্যেন্দ্রনাথ ঘোষ কে যিনি অবশ্য মন্টি ঘোষ নামে বেশী পরিচিত।সতীদেবী যখন যেখানে গিয়েছেন সবাইকে তাঁর অমায়িক ব্যবহার ও সংগীতে মুগ্ধ করেছেন। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু তাঁর গানের বড় ভক্ত, সুভাষচন্দ্রের অনুরোধে হরিপুরা কংগ্রেসে উদ্বোধনী সংগীত গেয়েছিলেন সতীদেবী।