প্রথম পাতা

পার্থকে বহিষ্কার করে অভিষেক খুব বিচক্ষণতার সাথে দুই তরফে চাপ রাখলেন, দলে পরবর্তী ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলেন

অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা নিউজ, কলকাতা, ২৮শে জুলাই ২০২২ : পার্থ চ্যাটার্জিকে দলীয় সব পদ থেকে (মোট ৫) বহিষ্কার করা হল দলের আইন শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দলনেত্রী মমতা ব্যানার্জির মতামত নেওয়া হয়। একইসাথে পার্থ চ্যাটার্জিকে সরকারি মন্ত্রীত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল। এটা শুধুমাত্র কিন্তু বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে নয়। এটা দলের মধ্যে একটা দৃষ্টান্তমূলক বার্তা দেওয়ার জন্য। এতদিন তৃনমূল দল সবটাই মুখে বলতো কিন্তু এবার তা কাজে করে দেখালো। কাকে দিয়ে এই দৃষ্টান্ত তৈরি করল, যিনি দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি মানে মমতা ব্যানার্জির পর যিনি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে দল বুঝিয়ে দিল আগামীদিনে এরকম কোন মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতা, ব্লকের নেতৃত্ব, পৌরসভার প্রতিনিধি, পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি-র বিরুদ্ধে এরকম কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে দল বসে থাকবে না। কিছুদিন আগে ২১শে জুলাই-এর মঞ্চে খোদ মমতা ব্যানার্জি কিন্তু এই শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে উল্লেখ করে বলেছিলেন, একটা কাজ করতে গেলে ভুল হয়, কিন্তু সেই ভুলকে সংশোধন করে ঠিক করে নিতে হবে। কিন্তু কেউ যদি সেখানে অন্যায় করে তবে তাকে শাস্তি পেতে হবে। দল তার পাশে থাকবে না। সেদিন কিন্তু মঞ্চে সকলের মাঝে বসেছিলেন আজকের বহিষ্কৃত মন্ত্রী ও দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা পার্থ চ্যাটার্জি। এরপরও এক পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে মমতা ব্যানার্জি সর্তকতার সাথে বলেছেন, কেউ যদি দলে থেকে কোন দুর্নীতি প্রমাণিত হয় তার যাবজ্জীবন হোক দল কোন বিরোধীতা করবে না।

অভিষেক ব্যানার্জি এই বার্তার মাধ্যমে দুপক্ষে বুঝিয়ে দিলেন তৃনমূল দলের আগামীদিনের পদক্ষেপ। একদিকে দলের একাধিক কর্মী ও নেতাদের বুঝিয়ে দিলেন নিজেদের সঠিক পথে চলার কথা এবং দলকে সামনে রেখে নিজের সম্পত্তি বা টাকা তোলার দিকে লিপ্ত না হওয়া। একই সাথে মানুষকে বুঝিয়ে দিলেন তৃনমূল দল মানুষের কথা ভাবে, মানুষকে বেশি প্রাধান্য দেয় এবং দলের কাছে মানুষের আবেগ, বিশ্বাস সবার আগে। যারা আজ বঞ্চিত তাদের বেনিফিট অফ ডাউটের ভিত্তিতে মর্যাদা দিলেন, সম্মান জানালেন। অন্যদিকে বিরোধী দল অর্থাৎ বিজেপিকে বুঝিয়ে দিলেন সময়ের মধ্যে বিচার ব্যবস্থা শেষ করতে হয়। দল হিসাবে অপরাধীর সাথে বৈষম্য আচরণ করা সঠিক রাস্তা নয়। একই অপরাধে তৃনমূলে থাকলে শাস্তি হবে আর তৃনমূল থেকে চলে গিয়ে বিজেপি-র পদলেহন করলে তাকে মাফ করে দেওয়া হবে এটা মানুষ ভাল চোখে দেখবে না। হিম্মত থাকলে বিজেপি দলের যে নেতাদের নামে অপরাধের অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দেখাক। সরাসরি আক্রমণ করে বলেন সারদাকান্ডে সুদীপ্ত সেন সরাসরি অভিযোগ করেছেন টাকা আত্মস্বাদ করার এবং লিখিত দিয়েছেন সেখানে কোন ব্যবস্থা হল না কারণ তিনি বর্তমানে বিজেপি করেন, তাই সেই তদন্ত ৮ মাস ধরে চলছে, কবে শেষ হবে তা কারও জানা নেই। এদিকে তৃনমূল হলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, এটা হতে পারে না। একই অপরাধে তৃনমূলের নেতা এবং বিজেপি-র নেতা যুক্ত ছিল, সেখানে তৃনমূলের নেতার জেল হল আর বিজেপি নেতা বহালতবিয়তে বাইরে ঘুরছে, এটা কি ধরনের বিচার ব্যবস্থা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *