পাপিয়া হালদারের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরে মহিলাদের উৎসাহ দেখে মন্ত্রী চন্দ্রিমা বললেন মহিলারাই যে কোন দুর্যোগ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত থাকে
অম্বর ভট্টাচার্য, এবিপিতকমা, সোনারপুর, ২৪শে মে ২০২০ : সাম্প্রতিক সোনারপুর উত্তর বিধানসভায় রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের বিদায়ী পৌরমাতার উদ্যোগে এবং তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সহযোগিতায় করোনা ও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সাহায্যার্থে এক রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই রক্তদান শিবিরের সব থেকে বড় আকর্ষণ ছিল রক্তদাতারা সকলেই মহিলা। এই মহতী রক্তদান শিবিরে শুধুমাত্র ১ নং ওয়ার্ডের ৩৭ জন মহিলা রক্তদান করেন।
এই রক্তদান শিবিরের আয়োজক বিদায়ী পৌরমাতা পাপিয়া হালদার বলেন, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী আমাদের জনপ্রিয় জননেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবং সেই দপ্তরের রাজ্য মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের সহযোগিতায় এই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। আমি খুবই ভাগ্যবান যে এই করোনা মহামারীর সময় যেখানে সারা রাজ্য জুড়ে এক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে রাজ্য সরকার সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে লড়াই-এ সামিল হতে পেরেছি। একদিকে মানুষের খাবারের সংস্থান নেই, রোজগারের সংস্থান নেই, করোনা ও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের অসহায় অবস্থা কারণ রাজ্যে রক্তের অভাব দেখা দিয়েছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করছে। সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশরা রক্তদান করছে। সেই রকম একটা অবস্থায় আমার ওয়ার্ডের মহিলারা এগিয়ে এসেছে রক্তদান করতে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য দপ্তরের রাজ্য মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, পাপিয়া আমাদের আই সি ডি এস বিভাগটার দায়িত্বে আছে। পাপিয়ার কাজ দেখেই ওকে এই দায়িত্ব দিতে সাহস করেছি, জানি পাপিয়া এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে। আজ সারা বিশ্ব এক মহামারীর সম্মুক্ষীন হয়েছে। ভারতবর্ষ তার বাইরে নেই। এইরকম একটা পরিস্থিতিতে ফের একবার প্রমাণ করে দিলেন যে কোন দুর্যোগের মোকাবিলা করতে পারে শুধুমাত্র মহিলারাই।তবে আমাদের দেশে বাকি রাজ্যের থেকে পশ্চিমবঙ্গ অনেক ভাল জায়গায় আছে। আমাদের মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর দুরদর্শিতার কারণে এই আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা কম হয়েছে। গোটা দেশে সবার প্রথম আমাদের মুখ্যমন্ত্রী এই লকডাউন ঘোষণা করেন। আজ ভারতকে এই সমস্যায় পড়তে হত না যদি আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল আগে থেকে বন্ধ করা যেত।
এছাড়া কেন্দ্র সরকারের বহু ভুল নীতির কারণে এই মহামারী আজ বিশাল আকার ধারণ করতে চলেছে।মুখ্যমন্ত্রীর পরিশ্রম ও তৎপরতার জন্য আজ রাজ্য সরকার করোনা মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত কিন্তু কেন্দ্র সরকার আর্থিক কোন অনুদানের কথা ঘোষণা করছে না।কেন্দ্র সরকারের আগের অনেক বকেয়া টাকা আজ রাজ্য সরকারের কাছে অনাদায় হয়ে থেকে গেছে।পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ অনেক আগে থেকেই আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন কিন্তু শেষ মুহুর্তে সেই পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হল কেন্দ্র সরকার, তবে শ্রমিকদের নিজের অর্থে ট্রেনের টিকিট কেটে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বিনা খরচে এই রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছেন।
এদিন যারা রক্তদান করেছেন তাদের মাস্ক, স্যানিটাইজার দিয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা হয়েছিল। সকল রক্তদাতাদের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দেওয়া হয় এবং রক্তদানের শেষে সকলকে একটা করে মানপত্র তুলে দেন পৌরমাতা পাপিয়া হালদার ও মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য আরও জানান, করোনা ও থ্যালাসেমিয়া রোগীদের সাহায্যার্থে গোটা রাজ্য জুড়ে এই রক্তদান শিবির চলছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১২০০ মহিলা রক্তদান করেছে। রাজ্য সরকার এই বিশেষ রক্তদান শিবিরের জন্য ১০টি অত্যাধুনিক ভ্রাম্যমান শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ভ্যান কিনেছে যার প্রতিটা ভ্যানের খরচ ৫৫ লাখ টাকা।এই ভ্যানে ৩০ জন সর্বোচ্চ রক্তদান করতে পারবে। প্রতিবার তিনজন করে রক্তদান করতে পারবে। একবার রক্তদানের পর ভ্যানটি সম্পূর্ণ স্যানিটাইজ করে আবার রক্তদান করা যাবে। এই শিবিরে ৩৭ জন মহিলা রক্তদাতার সংখ্যা বেশ প্রশংসার দাবি রাখে। আমি সকলকে ধন্যবাদ জানাবো এই অনুষ্ঠানে এগিয়ে এসে অংশগ্রহনের জন্য। Follow us at : www.facebook.com/abptakmaa.newspaper/
www.twitter.com/abptakmaa