প্রথম পাতা

রাজপুর সোনারপুরের ৪ নং ওয়ার্ডে পুরসভাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নিয়মের বাইরে গিয়ে চলছে নির্মান কাজ, নির্বিকার পৌরপিতা

অম্বর ভট্টাচার্য, তকমা, সোনারপুর, ২রা মে ২০২২ : রাস্তা মাত্র ৮ ফুটের কিন্তু সেই রাস্তার উপর রমরমিয়ে চলছে তিনতলা বাড়ির নির্মান। কি করে সম্ভব? ঘটনাটি রাজপুর সোনারপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের নবগ্রাম এলাকায় গিড়িবালা স্কুলের সন্নিকটে আইনজীবী মলয় সাহার বাড়ির বিপরিতে। বাড়ির মালিক এলাকা থেকে জানা গেল নাম উৎপল সেনগুপ্ত। পৌর নির্বাচনের ঠিক প্রাক্কালে এই বাড়ির নির্মান কাজ শুরু হয়, কিন্তু মাত্র ৮ ফুট রাস্তার উপর পৌরসভা কিভাবে তিনতলা বাড়ি নির্মানের অনুমতি দিল এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই নির্মানের অনুমোদন কি করে পৌরসভা দিতে পারে। এটা তো গেল নির্মানের সমস্যা। এরপর মাত্র ৮ফুট রাস্তা কিন্তু বাড়ির সামনে ও পিছনে পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী যে ছাড় দেওয়ার কথা তাও দেওয়া নেই। বাড়ির পিছনে ৪ ফুটের ছাড় থাকার কথা কিন্তু বাস্তবে ছাড় আছে মাত্র ২ থেকে ২.৫ ফুট আর বাড়ির সামনে ছাড় রয়েছে মাত্র ২ফুট।

এটা তো হল বাড়ির একতলার সমস্যা, এবার যদি দ্বিতীয় তলায় আসি সেখানেও নিয়মের বাইরে গিয়ে বহালতবিয়তে নির্মান কাজ চালাচ্ছেন বাড়ির মালিক। ক্যান্টিলিভার বাড়িয়ে প্রায় রাস্তার উপরেই চলে এসেছে দ্বিতীয়তলা। এটা তো একেবারেই নিয়মের বাইরে। পাশাপাশি বাড়ির মালিকদের সমস্যা থাকলেও তারা জানান, আমরা প্রথমে প্রতিবাদ করেছিলাম কিন্তু পরবর্তীতে বাড়ির মালিক ওয়ার্ডের পৌরপিতার কথা বলেন, জানান পৌরপিতা বাড়ি নির্মানের ব্যাপারে সব জানেন। এরপর থেকে কেউ আর আমরা প্রতিবাদ করছি না, তৃনমূলের জামানায় এরকম হবে সেটা মেনে নিয়েই চুপ করে আছি। এব্যাপারে পৌরপিতার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তার মোবাইলে ফোন করা হলে ফোন বন্ধ থাকায় কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

এখন প্রশ্ন এটাই, পৌরপিতার ভুমিকা কি? ওয়ার্ডে উন্নয়নের পাশাপাশি কোথায় কি বেআইনি হচ্ছে তাই দেখা। এরজন্যই মানুষ পাঁচ বছরের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করে। আর সেখানেই যদি গাফিলতি থাকে তবে তো মানুষ টাকা লেনদেনের অভিযোগ তুলবেই। মানুষকে তো বলার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডে বেআইনি নির্মান হচ্ছে আর এই ওয়ার্ডের দুবারের পৌরপিতা বিভাস মুখার্জি কিছু জানেন না বললে কেউ মানবে। বিভাস মুখার্জি গোটা ওয়ার্ডটা তালুর মধ্যে চেনা। কোন গলিতে কটা বাড়ি, কোন বাড়ি কত হল্ডিং যখন জানা তখন কোন গলিতে বেআইনি নির্মান হচ্ছে তবে সেটাও জানাটা স্বাভাবিক। এব্যাপারে বিধায়কের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মানুষের লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে। বেআইনি নির্মান পৌরসভা অনুমতি দেয়া না, প্রয়োজনে উচিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষ বলছে, কে নেবে আর কার বিরুদ্ধে নেবে? নাকের ডগায় পৌরপিতা অনুগামীদের বাড়ি দেখলেই তা প্রমান হয়ে যাবে পৌরপিতার ভুমিকা কি? যদি তার অনুগামীরা এই বেআইনি কাজে মদত দিয়ে থাকে তবে তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, আর যদি তিনি নিজেই যুক্ত থাকেন তবে পৌরসভা পক্ষ থেকে তাকে নোটিস করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

কিছুদিন আগে এই বিভাস মুখার্জির বিরুদ্ধে রাস্তার পাশে সরকারি জমি দখলদারি দোকানের জন্য বিক্রি করার অভিযোগ ওঠে, আমরা এব্যাপারের ওনার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি যা বলার আমার উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। সব সময়মত সামনে আসবে, প্রয়োজনে চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে পুলিশ দিয়ে তদন্ত করা হোক প্রকৃত দোষী কারা। আমি অবিবাহিত তাই আমার সংসার খরচের জন্য বেশি টাকা লাগে না। আমি মাথা উচিয়ে রাজনীতি করি, কোন কিছুকে ভয় পাই না। এখন প্রশ্ন, তিনি ভয় পান না ঠিক কথা কিন্তু কে বা কারা এই জমি বিক্রি করে টাকা নিয়েছে সেই তালিকাও তিনি প্রকাশ্যে আনছেন না, তাহলে মানুষ কি বুঝবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *